Thursday, June 4, 2020

ইসলামিক উপায়ে জীবনে স্বচ্ছলতা লাভের ১০ টি উপায় জেনে নিন Insaf trust.com


ইসলামিক উপায়ে জীবনে স্বচ্ছলতা লাভের ১০ টি উপায় জেনে নিন

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করতে পারি।

আর যে বান্দা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করতে পারবে তার ওপর আল্লাহ রহমত ও নিয়ামত দুইটাই বষর্ণ করেন।আল্লাহ কে খুশি করার মাধ্যমে জীবনের সকল সমস্যা দূর করা সম্ভব।জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানো সম্ভব।

আমাদের নবী-রাসূল এবং তাদের পরবর্তী গোষ্ঠীরাও তাদের জীবনে স্বচ্ছলতা আনয়নে কোরআন হাদিসের আলোকে কাজ করে গেছেন।তাই আমাদের সবার উচিত জীবনের অস্বচ্ছল অবস্থা থেকে অবতরণ করে স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপন করা।

তাহলে এখন জেনে নেওয়া যাক কোরাআন হাদিসের আলোকে কীভাবে জীবনে স্বচ্ছলতা আনয়ন করা যায়ঃ

১.তওবা-ইস্তিগফার করা:জীবনে স্বচ্ছলতা আনয়নের জন্য তওবা-ইস্তিগফার অতুলনীয়।কারণ তওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সকল গুনাহের মাফ চাওয়া যায়।

তওবাকারী পবিত্র মনে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করলে ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।তার ওপর রহমত বষর্ণ করেন।এ প্রসঙ্গে হযরত নূহ (আ.) স্বীয় কওমকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,’তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো,তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল,তিনি তোমাদের ওপর অজস্র বৃষ্টিধারা বষর্ণ করবেন,তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি বৃদ্ধি করে দেবেন,তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন,তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।’ (সূরা:নূহ,আয়াত:১০-১২)।

সুতরাং জীবিকার সচ্ছলতা প্রত্যাশীদের জন্য অধিক পরিমাণে তওবা ও ইস্তিগফার করতে থাকা উচিত।

২.আল্লাহর ওপর ভরসা:যেকোনো বিপদে আল্লাহর ওপরে ভরসা রাখা উচিত।আল্লাহর শরণাপন্ন হয়ে তার কাছে বিপদ থেকে মুক্তি লাভের দোয়া করতে হবে।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত,রাসূল (স.) বলেন,’আল্লাহ পাকের ওপর যেমন ভরসা করা উচিত তোমরা যদি তার ওপর তেমন ভরসা করো,তাহলে পাখিদেরকে যেভাবে রিজিক প্রদান করা হয়,অর্থাৎ সকালে তারা শূন্য উদারে বেরিয়ে যায় আর অন্ধকারে পূর্ণ উদারে ফিরে আসে।’ (জামে তিরমিজি,হাদিস:২৩৪৪)।

৩.তাকওয়া ও খোদাভীড়ি অর্জন করা:তাকওয়া ও খোদাভীড়ি জীবিকা লাভের অন্যতম পন্থা।আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,’যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে,আল্লাহ তার চলার পথ বের করে দেবেন।তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দিবেন।’ (সূরা:তালাক,আয়াত:২-৩)।যে আল্লাহকে ভয় করবেন আল্লাহ তার সব বিপদ-আপদ দূর করে দেবেন।যেখান থেকে রিজিক লাভ করার কথা সে চিন্তা করে না,সেখান থেকে সে রিজিক লাভ করবে।

৪.ইবাদতের জন্য ফারেগ হওয়া:এ প্রসঙ্গে নবীজি (স.) একটি হাদিস কুদসিতে বলেন,আল্লাহ পাক বলেছেন,’হে বনি আদম!তুমি আমার ইবাদতের জন্য নিজেকে ফারেগ করো।আমি তোমার মিনাকে সম্পদশালী করে দেবো এবং তোমার দরিদ্রতাকে দূর করে দেবো।আর যদি তা না করো তাহলে তোমার হাত কাজে ব্যস্ত করে দেবো আর লোকের কাছে তোমাকে মুখাপেক্ষী করে রাখবো।’ (জামে তিরমিজি,হাদিস:২৪৬৬)।

৫.আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা:আত্মীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করলে এবং বিপদ-আপদে তাদের সাহায্য করলে আল্লাহ খুশি হন।আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত,নবীজি বলেন,’যে ব্যক্তি রিজিকের স্বচ্ছলতা ও দীর্ঘজীবন পছন্দ করে,সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলে।’ (সহীহ বুখারি,হাদিস:৫৯৮৫)।

৬.আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা:আমাদের রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা।তার দেওয়া অসংখ্য নিয়ামতের সাগরে আমরা ডুবে আছি।এজন্য আল্লাহর তরফ থেকে যারা অসংখ্য নিয়ামত লাভ করেছেন,তারা যেনো তাদের সম্পদকে পুঞ্জীভূত করে না রাখে।সেসব নিয়ামত যেনো আল্লাহর পথে ব্যয় করেন।আল্লাহ তায়ালা বলেন,’তোমরা যা কিছু ব্যয় করো,আমি তার বিনিময়ে তোমাদের আরো অনেক কিছু দেব।’ (সূরা:সাবা,আয়াত:৩৯)।

৭.দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি সদয় হওয়া:যারা দুর্বল ও অসহায় তাদের প্রতি সদয় হওয়ার মাধ্যমে স্বচ্ছলতা লাভ করা যায়।নবীজি বলেন,’তোমরা দুর্বল ও অসহায় ব্যক্তিদের সাহায্য করার মাধ্যমে আমার সন্তুষ্টি অর্জন করো।তাদের কারণেই তোমরা রিজিক লাভ করে থাকো এবং সহযোগিতা পেয়ে থাকো।'(সুবানে আবু দাউদ,হাদিস:২৫৯৪)।

৮.দ্বীনের শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় করা:যাদের ধর্মীয় জ্ঞান লাভের ইচ্ছা আছে কিন্তু আর্থিক সংক’ট ও অস্বচ্ছলতার জন্য পারছে না,তাদের অবশ্যই সাহায্য করতে হবে।কারণ এমন নেককারজনক কাজের জন্যও আল্লাহ তায়ালা রিজিক বৃদ্ধি করে দেন,আর্থিক সমস্যা দূর করে দেন।

৯.আল্লাহর পথে হিজরত করা:নবী করিম (স.) বলেন,আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,যে কেউ আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করে, সে এর বিনিময়ে অনেক স্থান ও স্বচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে।'(সূরা:নিসা,আয়াত:১০০)।অর্থাৎ আল্লাহর পথে হিজরত করে নিজ স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে যেয়ে থাকলে,আল্লাহ তার সম্মান বৃদ্ধি করে দেন।

১০.ধারাবাহিকভাবে হজ্জ ও ওমরাহ পালন করা:হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত,নবীজি বলেন,’হজ্জ ও ওমরাহ একের পর এক আদায় করো।কারণ এ দু’টি দরিদ্রতা ও গুনাহকে এমনভাবে দূর করে দেয় যেমন অগ্নি-লৌহ ও স্বর্ণ-রৌপ্যর ময়লা দূর করে দেয়।আর হজ্জ মাবরুর এর প্রতিদান শুধুই জান্নাত।'(জামে তিরমিজি,হাদিস:৮১০)।

আরো পড়ুনঃ

No comments:

Post a Comment