জীবনের কিছু অলিখিত নিয়মের মধ্যে এখনকার মতো এক নম্বরে থাকছে,
প্লেন, ট্রেন বা অন্য কোনো বাহনে যারা মাঝের সিটে বসে তাদের কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করুন।
জানলার পাশে বসা লোকটা জানলায় হেলান দিতে পারে, নড়তে চড়তে পারে। অপর দিকের লোকটা গাড়ির মধ্যে যেখানে খুশি ঘুরে আসতে পারে। কিন্তু মাঝের লোকটা নিরুপায়!
দয়া করে মাঝের লোকটার দুপাশের হাতল দুটো অন্তত তার জন্য ছেড়ে দিন। বেচারা এটুকুতেই আশা করি হাফ ছেড়ে বাঁঁচবে।
২। খুব পুরাতন একটি নিয়ম হচ্ছে - দেরি না করা। কোনো মিটিং, নিমন্ত্রণ, বা শিডিউল কাজে দেরি না করে একটু আগেই পৌঁছে যান।
৩। নাথানেইল বোল্ডিন হেডফোন আবিষ্কার করেছেন আপনাকে যেনো ভীড়-ভর্তি বাসের মধ্যে বসের সাথে গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে কথা বলতে না হয়।
আপনার প্রাইভেট কথা কেউ শুনতে চায় না, দয়া করে হেডফোনের স্বদব্যবহার করুন।
৪। কিছু মানুষের তিন নাম্বার হাত থাকে। যখন তারা জুতার ফিতা বাঁধার সময় বা কিছু একটা করার সময় হাতের টাকাটা কোথায় রাখবে ভেবে পায় না তখন সোজা মুখে গুঁজে দেয় যেন সেটা তাদের তিন নাম্বার হাত। বিষয়টা খুব নোংরা! ভেবে দেখুন তো বাংক থেকে কত হাত, কত পকেট ঘুরে টাকাটা আপনার হাতে এসেছে!
কেবল এই করোনাকালীন সময়ে নয়, অন্য সময়েও টাকা মুখে পুরা ঠিক নয়।
৫। কাশাকাশির সময় রুমাল না থাকে অন্তত হাত দিয়ে মুখটা ঢাকুন।
৬। যখন কেউ হাসে তখন তাকে নিয়ে মজা নেয়া উচিত নয়। কিংবা ভ্যাংচানো - 'আরও হাস'। হতে পারে তার দিনটা খুবই খারাপ কেটেছে, আর এই মাত্র সে একটু হাসার সুযোগ পেলো।
৭। খাওয়ার সময় মুখ বন্ধ রেখে চিবাতে থাকুন, কেউ আপনার মাংস চিবানোর শিল্পকলা দেখতে চায় না।
৮। যখন আপনার সাথে কেউ কথা বলে, দয়া করে হাতের ফোনটা চাপাচাপি না করে পকেটে রেখে দিন। অপর জন আপনার পূর্ণ মনোযোগের দাবিদার।
৯। আপনি যেই হোন না কেন, যদি দেখেন কোনো বাচ্চা আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছে বা হাত নাড়ছে, কোনও অজুহাত দিবেন না, বাচ্চাটার দিকে ফিরে হাসুন বা ফিরতি হাত নাড়ান।
১০। কারো কাছ থেকে কিছু ধার করলে অন্তত তার চাওয়ার আগে ফিরিয়ে দিন।
১১। কারো শোবার ঘরে কড়া নাড়ার পর যদি কোনো জবাব না পান তবে ভেবে নিবেন না যে আপনাকে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
১২। অন্যের বাড়িতে টয়লেট ব্যবহার করার পর পানি ঢালতে বা ফ্লাশ করতে ভুলবেন না।
১৩। কারো বাড়িতে হুটহাট করে যাওয়ার আগে অন্তত একটা ফোনকল করুন। বিশেষত যদি সময়টা খাওয়ার সময় হয়।
১৪। জিমে, বাসে, ট্রেনে বা রাস্তায় যদি কারো কানে হেডফোন দেখে থাকেন তবে বুঝে নিবেন সে চায় না কেউ তাকে বিরক্ত করুক। হতে পারে সে কোনো গান বা অডিও বই শুনছে বা অন্য কিছু। যাই হোক, তাকে তার মতো থাকতে দিন।
১৫। কখনও কোনও মেয়েকে তার প্রেগন্যান্সির বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেন না বা অভিনন্দন জানাবেন না, যদি না সে আপনাকে নিজের থেকে বলে বা আপনি ১০০ ভাগ নিশ্চিত হন যে সে সত্যিই প্রেগন্যান্ট।
আর ডেলিভারির তারিখটাও যদি ভুলে যান, উঁহু, তাকে জিজ্ঞেস করার কোনও দরকার নেই। ভুলেও জিজ্ঞেস করবেন না।
১৬। যদি দেখেন কারো মুখে কিছু লেগে আছে, চোখের কোণে ময়লা, ঠোঁটে বা দাতের ফাঁকে কিছু আটকে আছে, তবে তাকে একপাশে ডেকে জানিয়ে দিন, অন্তত পরবর্তী বিব্রতকর অবস্থার হাত থেকে বাঁচান।
১৭। যদি কাউকে প্রোপোজ করেন এবং সে খুব সুন্দর ভাবে না করে দেয় তবে তাকে জিজ্ঞেস করতে যাবেন না কেন সে না করলো বা আপনাকে কি একটা সুযোগ দেয়া যেতে পারে বা আপনারা কি বন্ধু হতে পারেন ব্লা ব্লা ব্লা...
ফ্লার্টিং ছাড়ুন, তার মতামতকে সম্মান দিন এবং দয়া করে তাকে আরও কিছু জিজ্ঞেস করে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিবেন না।
১৮। যখন কারো সাথে ধাক্কা লেগে যায়, তখন দুজনেরই সরি বলা উচিত। দুজনই পরোক্ষভাবে দোষী।
১৯। যদি আপনার হাতে আর কোনো উপায় না থাকে, ছেলেদের প্রস্রাবখানায় কখনও অন্য ছেলেদের ঠিক পিছনে গিয়ে দাঁড়াবেন না। এটা উদ্ভট! বিশ্রি! এমনটা একদম করবেন না। একটু দূরে দাঁড়ান।
২০। দয়া করে কখনও কারো বিয়েতে গিয়ে প্রোপোজ করবেন না। দিনটা কেবল বর-কনের জন্যই রাখুন। সকলের মনোযোগ তাদের উপরেই থাকতে দিন।
২১। যখন কেউ বাড়িতে আসে সবার আগে তাকে পানি পান করার জন্য অনুরোধ করুন। অবশ্য রুহ-আফজা হলেও আমি আপত্তি করব না।
H.M Arif Hossain
No comments:
Post a Comment