ভারসাম্যপূর্ণ ন্যায় বিচার ও সমতার ভিত্তির ওপরেই একটি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত। মানুষ হিসেবে আল্লাহ তা’আলা নারী ও পুরুষকে সমান মান দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সামর্থ ও যোগ্যতার ভিন্নতা এবং সে অনুযায়ী দায়িত্ব কর্তব্যের বিভিন্নতা দিয়ে। শারীরিক ও মানসিকভাবে নারী ও পুরুষ সম্পূর্ণ ভিন্ন। জীবনের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা এবং দায়িত্ব-কর্তব্যও বিভিন্ন। ইসলামে নারী ও পুরুষ সমান কিন্তু একই রকম নয়।সূরায়ে নিসার ২২ থেকে ২৪ আয়াতে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে যে, মুসলিম পুরুষ কোন কোন নারীকে বিবাহ করতে পারবে না। এর পরে ২৪ আয়াতে আলাদা করে বলা হয়েছে সেই সব নারীও (নিষিদ্ধ) যারা অন্যের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে- অর্থাৎ অন্যের বউ।
ইসলামে নারীর জন্য বহু-স্বামী গ্রহণ নিষিদ্ধ কেন, নিচে তা উল্লেখ করা হলো
১. একজন পুরুষের একধিক স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তার পরিবারে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের মা-বাবার পরিচয় খুব সহজেই পাওয়া যায়। শিশুর বাবা কে আর মা কে। অপরদিকে একজন নারী যদি একাধিক স্বামী গ্রহণ করে তবে এ পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুর শুধু মায়ের পরিচয় পাওয়া যাবে-বাবার নয়। মা-বাবার সুস্পষ্ট পরিচয়ের ক্ষেত্রে ইসলাম আপোসহীন।
আধুনিক মনোবিজ্ঞানিরা বলেন, যে শিশু তার মা-বাবার পরিচয় জানে না, বিশেষ করে মার- সে শিশু তীব্র মানসিক
জটিলতা ও হীনমন্যতায় ভোগে। এ শিশুদের শৈশব নিকৃষ্টতর এবং আনন্দহীন। পতিতাদের সন্তানরা এর জলন্ত প্রমাণ। এদের শিশুকাল ও কৈশোর মর্মান্তিক। বহু স্বামী গ্রহণকারী পরিবারে জন্ম পাওয়া শিশুকে নিয়ে কোনো স্কুলে ভর্তি করতে গেলে যদি মাকে প্রশ্ন করা হয় শিশুর বাবার নাম? তা হলে সে মাকে দু’জন অথবা তার বেশি পুরুষের নাম বলতে হবে।
২. প্রকৃতি প্রদত্ত যোগ্যতা ও বৈশিষ্ট, বহুগামীতায় নারীর চাইতে পুরুষের বেশি।
৩. শারীরিক যোগ্যতায় একজন পুরুষের পক্ষে কয়েকজন স্ত্রীর স্বামীর দায়িত্ব ও ভূমিকা পালন সহজ। একজন নারী সেও একই অবস্থানে, অর্থাৎ যার কয়েকজন স্বামী আছে, তাদের স্ত্রী হিসেবে যে দায়িত্ব ও কর্তব্য তার ওপর বর্তায় তা পালন করা তার পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। কেননা মাসিক ঋতুচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে মানসিক ও আচরণগত বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্যে তাকে পড়তে হয়।
৪. একজন নারী যার একাধিক স্বামী থাকবে-তাকে তো একই সাথে কয়েকজনের যৌন-সঙ্গী হতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সমূহ সম্ভাবনা থাকবে যৌন রোগের এবং যৌনতার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ার। উপরন্তু তার মাধ্যমেই সে সব রোগে তার স্বামীর আক্রান্ত হবে। এমনকি যদি তার স্বামীদের কারো অন্য কোনো নারীর সাথে বিবাহ বর্র্হিভূত যৌন সম্পর্ক নাও থাকে। পক্ষান্তরে একজন পুরুষ- যার একাধিক স্ত্রী রয়েছে, স্ত্রীদের কারো যদি বিবাহ বহির্ভূত অন্য কারো সাথে যৌন সম্পর্ক না থাকে তাহলে যৌনতা সংক্রান্ত কোনো রোগে আক্রান্ত হবার আদৌ কোনো সম্ভাবনা নেই।
সবচেয়ে বড় কথা হলো যিনি নর-নারী সৃষ্টি করেছেন; তিনি নিষিধ করেছেন।
# শুধু ইসলাম না অন্যন্যে ধর্মেও পুরুষের বহু বিবাহ ধর্মসম্মত। এবং একজন মহিলার একাধিক বিবাহ নিষেধ।প্রশ্নকর্তাকে বলি আপনার মায়ের যদি চারজন স্বামী থাকত তাহলে আপনি কাকে বাবা ডাকতেন চারজনকে। এখন আপনি বলবেন আমি মাতৃপরিচয় দিতাম তখন পিতার পরিচয় দিতে গেলে তো চারজনের নাম আসতো। আসলে এটা কোন সভ্য সমাজের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।
আমরা যাতে সঠিকভাবে আমাদের বাবা ও মায়ের পরিচয় দিতে পারি এজন্যে ইসলাম নারীর বহু বিবাহ সমর্থন করে না। আর এটা বৈষম্য নয় নারী পুরুষের ক্ষেত্রে সমতা রক্ষা করেছে ইসলাম।
No comments:
Post a Comment