Sunday, May 10, 2020

নিত্য বহারের একটি উপকরণ সাধারণ নুন বা খাবার লবন বা সল্ট-এর ব্যাপারে আপনি কি কিছু মজার তথ্য ভাগ করবেন


সবচেয়ে কমদামী জিনিস হল লবন কিন্তু তার উপকার ব্যাপক। যদিও আমি ২০ বছরের বেশী হবে ভাতের সাথে লবন খাই না, এমনকি পান্তা ভাতেও না। যেই জিনিস যত উপকারের আল্লাহ তা ততই সহজ করে দিয়েছেন, যেমন পানি, অক্সিজেন।

খিস্টের জন্মের ৬০০০ হাজার বছর আগেও মানুষ খনি থেকে লবণ তুলতে পারত। আমরা খাওয়ার জন্য যে লবণ ব্যবহার করি তার বেশির ভাগই আসে সমুদ্রের লবণ থেকে। সাধারণ লবণ দেখতে সাদা হলেও খনি থেকে তোলা লবণ বিভিন্ন রঙের হতে পারে। সাদা লবণ মূলত সমুদ্রের পরিশোধিত লবণ। পৃথিবীর অনেক জায়গায় কালো লবণ পাওয়া যায়। এর বেশির ভাগ পাওয়া যায় ভারতে। ওখানে এই লবণকে কালা নাম্মক বলা হয়। এটি মূলত খনির লবণ।

চুলের যত্নে লবণ বেশ উপকারী। আপনার চুল যদি তৈলাক্ত হয়, তাহলে শ্যাম্পুতে ২-৩ চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। দুই থেকে তিনবার লবণ মেশানো শ্যাম্পু ব্যবহার করলেই পাবেন মনের মতো ফল।

শুধু চুল নয়, ত্বকের জন্যও খুব ভালো নিত্যপ্রয়োজনীয় এই উপাদানটি। শুধু এক কাপ নারকেল তেলের মধ্যে ২ টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ দিয়ে ত্বক মাসাজ করুন।

চলুন দেখে লবনের কয়েকটি অজানা ব্যবহারঃ

১. এতে আছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান। জীবাণুনাশে বেশ কার্যকর লবণ। লবণ-পানিতে শাক-সবজি ধুয়ে ফেলুন। জীবাণু চলে যাবে।

২. রান্নাঘরের সিঙ্কে অনেক ময়লা লেগে থাকে। হাতে কিছু লবণ নিয়ে সিঙ্কে ঘষতে থাকুন। সিঙ্কের যেকোনো ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ঝকঝকে হবে নতুনের মতো।

৩. কাঠের ময়লা সাফের কাজও হয় লবণের ব্যবহারে। হালকা উষ্ণ পানিতে লবণ নিন। একটি কাপড় এই পানিতে ভিজিয়ে কাঠ পরিষ্কার করুন। এরপর আবার শুকনো কাপড়ে মুছে ফেলুন আসবাবপত্র।

৪. পিঁপড়ার অত্যাচার দূর করতে পারে লবণ। পানি যাওয়ার ড্রেন, রান্নাঘরের এখানে-সেখানে এবং অন্যান্য স্থানে লবণ ছিটিয়ে রাখুন। পিঁপড়া চলে যাবে।

৫. বাগানের আগাছা পরিষ্কারের কাজেও লবণের জাদুকরী ক্ষমতা রয়েছে। আগাছার ওপর লবণ ছিটিয়ে দিন এবং উপড়ে ফেলুন। এগুলো আর গজাবে না।

(একটি লবন খনির ছবি)

৬. দুধ টাটকা রাখতেও কাজ করে লবণ। অবিশ্বাস্য শোনায়। কিন্তু দুধ নষ্ট হওয়া রোধ করে লবণ।

৭. জুতা, ক্লোসেট বা তাকের বাজে গন্ধ তাড়াতে পারে লবণ। আলমারির পুরনো গন্ধও দূর করতে পারে।

৮. শক্ত দাঁত গঠনে লবণের উপকারিতার কথা অনেকেই জানেন। এখন অনেক টুথপেস্টে লবণ রয়েছে বলে বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। সামান্য সরিষার তেলে লবণ মিশিয়ে তা দাঁতে ঘষুণ। এতে দাঁতের রোগ দূরে থাকবে। দাঁতের স্বাস্থ্যে এই রেসিপি বেশ কাজের।

৯. রান্না করতে গিয়ে আগুনের বা গরম জলের আঁচ লেগে চামড়া পুড়ে বা পানি জমে ফোসকাও পড়ে যায়। তখন আক্রান্ত স্থানে সঙ্গে সঙ্গে লবণ লাগিয়ে নিন। জ্বালা কমে যাবে এবং ফোসকাও পড়বে না।

১০. মাছ কাটতে গিয়ে অনেক সময় হাতে কাঁটা বিঁধে যায়৷ তীব্র যন্ত্রণায় নাজেহাল অবস্থা হয়। কাঁটা বিঁধে যাওয়া জায়গায় লবণ ঘষে দিন। অথবা জলে লবণ মিশিয়ে আক্রান্ত স্থান তাতে ডুবিয়ে রাখুন। ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন৷

১১. দাঁতে অল্প ব্যথা হলে রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করে এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলে লবণ মিশিয়ে মুখে রেখে ফেলে দিন৷ তারপর আর কিছু মুখে দেবেন না৷ পরপর তিন দিন এ রকম করলে দাঁত ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে৷

১২. গলা ব্যথাতেও লবণ পানির সমান উপকারী। টনসিলের ব্যথা বা ঠাণ্ডাজনিত কারণে গলা ব্যথায় উষ্ণ গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে গলায় কিছুক্ষণ রেখে ফেলে দিন৷ অনেকটা আরাম পাবেন।

১৩. পোকামাকড় কামড়ে দিলে আক্রান্ত স্থান অনেক সময় লাল হয়ে ফুলে যায়। উষ্ণ গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানটি ধুয়ে ফেলুন। জ্বালা বা অস্বস্তি কমে যাবে।

১৪. দাঁতের হলদে ভাব সরিয়ে সাদা রং ফিরিয়ে আনতে লবণের সঙ্গে খানিকটা লেবু মিশিয়ে তা দিয়ে দাঁত মাজুন। তিন দিনের মধ্যেই দাঁতের সাদা রং ফিরতে শুরু করবে।

১৫.. দাঁতের গোড়ায় ব্যথা করলে বা মাড়ি ফুলে গেলে লবণ মেশানো পানি তা উপশম করতে পারে। উষ্ণ গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে তা কিছুক্ষণ মুখে ধরে রাখুন। দুই দিন দুই বেলা নিয়মিত করলেই মাড়ির ব্যথা কমবে৷

১৬.মাথার যন্ত্রণা হলেও এক গ্লাস লবণপানি খান। ১৫ মিনিটে ফল পেতে পারেন।

Arif

No comments:

Post a Comment