হুজুর ( সাঃ) বর্ণনা করেন আমি
মেরাজের
রজনীতে ছয় শ্রেণীর নারীকে
জাহান্নামের
কঠিন আযাব ভোগ করতে দেখেছি
( ১) ঐ নারী
যে মাথার চুল খুলে বেপর্দা হয়ে ঘর
থেকে
বাহির হয়( ২) ঐ নারী যে তার স্বামীর
সাথে তর্ক
করে এবং স্বামীকে সম্মান করেনা
( ৩) ঐ নারী
যে তার স্বামী থাকার সত্ত্বেও পর
পুরুষের
সাথে কুকর্মে লিপ্ত হয়( ৪) ঐ নারী
সে
অপবিত্র থাকার সত্ত্বেও পবিত্রতা
অর্জনে
অলসতা করে এবং নামাজের
অমনোযোগী( ৫)
ঐ নারী যে মিথ্যা কথা বলে এবং
গীবত গায়( ৬)
ঐ নারী যে অন্যের সুখ দেখে হিংসা
করে এবং
উপকার করে খোঁটা দেয়।
প্রিয় সম্মানিত সুধী আমার এ আলোচনা কোন বিশেষ পক্ষকে হেয় করার জন্য নয়, বরং প্রিয় নবীর ১টি হাদীসের আলোকে বাস্তব কিছু ভুল ভ্রান্তি তুলে ধরা উদ্দেশ্য যা আমাদের মা বোনদের মধ্যে পাওয়া যায়, আর সে ভুল ভ্রান্তির কারনে তাঁরা জাহান্নামে যাওয়ার রাস্তা সহজ করে নেয়,
আশা করব আমার বাংলা ভাষাভাষি সকল মা বোনেরা এ আলোচনা শুনে এত বেশী উপকৃত হবেন যে উপকার এর ঋণ শোধ করার মত নয়।
প্রথমে একটা হাদীস শুনুন যা শুনে মানুষ কাঁদে। নবী করিম (দরুদ) এরশাদ করেন ৯৯ নারীদের মধ্য থেকে ১জন জান্নাতে যাবে আর বাকীরা জাহান্নামে যাবে।
অপর দিকে বুখারী ও মুসলিম শরীফের আরেকটি মুত্তাফাক আলাইহ হাদীস
উসামা ইবনে যায়েদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমি জান্নাতের গেটে দাড়ালাম, দেখলাম যারা তাতে প্রবেশ করেছে তারা অধিকাংশ ছিল দুনিয়াতে দরিদ্র অসহায়। আর ধনী ও প্রভাবশালীদের আটকে দেয়া হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে যাদের জাহান্নামে যাওয়ার ফয়সালা হয়ে গেছে তাদের কথা আলাদা। আর আমি জাহান্নামের প্রবেশ পথে দাড়ালাম। দেখলাম, যারা প্রবেশ করছে তাদের অধিকাংশ নারী।
এ হাদীসে মোবারক পাঠ করে মানুষ অনেক পেরেশান হয়ে যান, বিশেষ করে নারী সমাজ, এটা যেহেতু মহানবীর (দরুদ) বানী তাই চিন্তা হওয়ারই কথা। এবং মনে প্রশ্ন আসার কথা যে নারীরা এত বেশী পরিমাণ জাহান্নামে কেন যাবে?
সে প্রশ্নটি একজন নারী মহানবীর কাছে করেছিলেন যেমন মুসলিম শরীফের হাদীস আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : হে নারীগণ! তোমরা দান-সদাক করো। বেশী বেশী করে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। কেননা আমি জাহান্নামে তোমাদের অধিক হারে দেখেছি। এ কথা শোনার পর উপস্থিত মহিলাদের মধ্য থেকে একজন -যার নাম ছিল জাযলা- প্রশ্ন করলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের কেন এ অবস্থা? কেন জাহান্নামে আমরা বেশী সংখ্যায় যাবো? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তোমরা স্বামীর প্রতি বেশী অকৃতজ্ঞ ও অভিশাপ দাও বেশী।
বলতে খারাপ শুনালেও আসলে আমাদের সমাজের নারীদের বাস্তব চিত্র এ রকমই যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। আমি দাম্পত্য জীবনে অনেক সুখী নারীকে দেখেছি তারা স্বামীর সামান্য একটু ভুল হলেই গোটা জীবন যে স্বামীর সাথে সুখের সংসার করেছে, ভালবাসায় প্রতিটি মুহুত কাটিয়েছে তা বেমালুম ভুলে যায় অস্বিকার করে স্বামীকে অকৃতজ্ঞতার সাথে বলে তুমি আমার জন্য কি করেছো? তোমার ঘরে আসার পর আমি কিছুই পেলাম না, তুমি আমার জীবনটা বরবাদ করে দিয়েছ ইত্যাদি ইত্যাদি। মহিলারা সামান্য কারনেই আবেগী হয়ে যায় তখন তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, তখন তারা কি বলছে কি করছে তার হুস থাকে না, সে জন্য ইসলামী শরীয়ত তালাক দেয়ার ক্ষমতা পুরুষের হাতে দিয়েছে, যদি তালাকের ক্ষমতা নারীদের হাতে থাকত তাহলে এ সমাজে কোন বিবাহ টিকে থাকত কিনা সন্দেহ।
অনেক সময় নারীরা সামান্য বিরক্ত হলে নিজ সন্তানদেরও অভিশাপ দেয়। নারীদের জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য এ দুটো স্বভাব পরিহার করতে হবে অবশ্যই। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বলার উদ্দেশ্য এটাই। তিনি নারীদের স্বভাব সংশোধন করার জন্যই এ কথা বলেছেন। নারীদের খাটো করা বা তাদের ভূমিকা অবমুল্যায়নের জন্য বলেননি।
এবার আসুন নারীদের আরেকটি ভুল যা তাঁদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট তা হল নারীদের মধ্যে ফজরের নামাজ কাজা করাটা খুব বেশী দেখা যায়। এমনকি অনেক দ্বীনদার নামাজী নারীরাও ফজরের নামাজ কাজা করে ফেলে।
তেমনি ভাবে নারীদের আরো একটি ভুল যা তাঁদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যায় তা হল বেশীর ভাগ নারী যাকাত দেয়ার ব্যপারে একেবারেই উদাসিন। খবর নিয়ে দেখা যায় এক একজনের আলমারি ভর্তি সোনা রুপার গহনা, যাকাত দিতে বললে বলে আমার কাছেতো নগদ টাকা নাই। হে বোন জেনে রাখুন এ শখের গহনাই কাল আপনার জন্য জাহান্নামে যাওয়ার কারন হতে পারে। তাই প্রয়োজনে গহনা বীক্রি করে হলেও জাকাত দিয়ে দেয়া হল বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তাছাড়া যে সব নারীর উপর যাকাত ফরয হয় তাদের জন্য কুরবানী করাও ওয়াজিব হয় কিন্তু আমরা শতের মধ্যে একজনকেও খুঁজে পাই না যারা নিজের কাছে সম্পদ থাকা সত্বেও টাকা পয়সা খরচ করে পশু কিনে এনে কুরবানী করেন, অধিকাংশ মহিলারা স্বামীর উপর নির্ভর করে থাকে নিজের উপর যে কুরবানী ওয়াজিব তা জানেও না খবরও রাখে না।
অনেক নারীর আরেকটি মারাত্মক ভুল হল যে তাঁরা গোসল ফরয হলে নাপাক হলে তা থেকে পাক সাফ হওয়ার জন্য নানান কারনে গোসল করতে দেরী করে এমনকি এ চক্করে পরে নামাজ পর্যন্ত কাজা করতে থাকে। অধিকাংশ মহিলা তাঁদের ফরয জ্ঞান যেমন হায়েজ নেফাজ এস্তেহাজা এসব ব্যপারে পরিপূণ জ্ঞানও রাখে না। অধিকাংশ নারী তাঁদের যে প্রতিমাসে ঋতুস্রাব হয় সে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর তাঁর উপর যে গোসল ফরয হয় সেটা পর্যন্ত জানে না। গোসল ফরয হলে কিভাবে ফরয গোসল করতে হয় তাও জানে না। তারা মনে করে বিয়ে করার পরই গোসল ফরয হয় তখনই তারা গোসল করা শিখে। এ থেকে বুঝা যায় যারা গোসল কখন ফরয হয় ফরয গোসল কিভাবে করতে হয় তা যদি না জানে তাহলে বুঝে নিন তাঁরা গোটা লাইফটাই নাপাকী অবস্থায় কাটিয়েছে, আর এ অবস্থায় যে সব নামাজ কালাম করেছে তা কি কবুল হবে?
অনেক মেয়েরা শখ করে নেইল পলিশ লাগিয়ে থাকে, অথচ এ নেইল পলিশ লাগানোর ফলে অযুও হয়না গোসলও হয়না, এ নেইল পলিশ তুলতেও সময় লাগে তাই অনেক নেইলপলিশ ওয়ালা নামাজ ছেড়ে দেয়, আবার অনেকে নেইল পলিশ না তুলেই অযু করে নামাজ আদায় করে ফলে সে মুলত অযু ছাড়াই নামাজ পড়ল। কারন যতক্ষণ নেইল পলিশ রিমোভ করবে না ততক্ষন অযু হবে না।
তেমনিভাবে অধিকাংশ নারী পর্দা করার ব্যপারে এতই উদাসিন যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। কোন বিয়ে শাদির অনুষ্ঠানেতো সে বেপর্দাগীরি আরো বেড়ে যায়।
তাছাড়া ২ জন নারী যখন মিলিত হয় তাঁদের আলোচনার বিষয়বস্তু হয় ৩য় জনের গিবত করা,েআর নারীদের স্বভাবই এমন যে তারা কয়েকজন একত্র হলে কথা না বলে থাকতে পারে না, আর কথার বিষয়বস্তুই হয়ে থাকে গীবত পরনিন্দ এসব, আর এ গীবত করতে করতেই অনেক নারী জাহান্নামের দরজায় পৌঁছে যায়।
এক বাদশার ঘটনা তিনি ঘোষনা দিলেন কেহ যদি চমৎকার করে মিথ্যা বলতে পারে তাকে পুরস্কার দেয়া হবে। তখন সকলেই মনের মাধুরি মিশিয়ে মিথ্যা গল্প বলতে আরম্ভ করল। তখন সবশেষে একজন লোক এসে বলল আমি এক জায়গায় অনেক মহিলাকে বসে থাকতে দেখলাম কিন্তু সেখানে সকলেই চুপচাপ তারা কেহ কারো সাথে কথা বলছে না। তখন বাদশা এ লোকটিকেই মিথ্যা বলাতে পারদর্শী হিসেবে পুরস্কার দিল। কারন বাদশাও জানেন যে যেখানে কয়েকজন নারী থাকে সেখানে তারা চুপচাপ থাকতে পারে না।
এই যে নারীরা নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে, ননদের বিরুদ্ধে, শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে শেকায়েত করে তা আল্লাহর পছন্দ নয়। তার পরীবর্তে যদি তারা ধৈর্য্য অবলম্বন করে তাহলে তারা এর উত্তম প্রতিদান পেত।
তেমনি ভাবে অধিকাংশ নারীরা খুবই কৃপন হয়ে থাকে, দান সদকা করতে খুবই কৃপনতা করে থাকে, যদি নারীরা বেশী বেশী সদকা করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা এদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে দিবেন।
কোন নারী যদি ভুলক্রমে কোন অন্যায় করে ফেলে তাহলে ভুল শিকার করতেও লজ্জা করে দেরী করে, অথচ দুনিয়ায় ক্ষমা চাওয়াটা খুবই সহজ, কিন্তু কিয়ামতের দিন এর জবাব দেয়াটা খুবই কষ্টকর।
এছাড়াও নারী রাগের মাথায় কুফুরী কালাম বলে ফেলে । এমন কথা বলে দেয় যার ফলে মানুষ ঈমানহারা হয়ে যায়। কুফুরী কালামের মধ্যে সবচেয়ে বড় কুফুরী হল যেভাবে স্বামীর বিরুদ্ধে নারীরা অভিযোগ করে বসে তেমনি ভাবে আল্লাহ তায়ালার বিরুদ্ধেই অভিযোগ করা আরম্ভ করে দেয়। যেমন বলে আল্লাহ আমার দোয়া শুনেন না তাই এখন আর আল্লাহর কাছে দোয়াও করি না। নাউজুবিল্লাহ।
নারী সমাজের আরেকটি বড় ভুল তারা কোন বিধর্মীর কালচার বললে তা লুফে নেয়, কিন্তু যদি বলা হয় এ কাজটি আমাদের প্রিয় নবী করিম (দরুদ) এর সুন্নত তখন তারা সে দিকে ফিরেও তাকায় না।
এদের আরো একটি বিষয়ে অবহেলা তা হল নারীদের প্রয়োজন মিটলেই হল, তারা স্বামী কোথা থেকে কামাই করে আনছে সে দিকে খবরদারি করে না, স্বামী কি চুরি করে আনছে নাকি ঘুষের টাকা আনছে সে ব্যপারে তাঁদের কোন মাথাব্যথাই নাই।
তেমনিভাবে আল্লাহ তায়ালা কোন নারীকে যদি ভাল ঘরে জন্ম দেন, পিতা ধনী হন, তাঁর চেহেরা ছুরতও যদি সুন্দর হয় তখন সে এতটাই বেপরোয়া ও অহংকারী হয়ে উঠে যে সে তাঁর সামনে অন্য কোন নারীর সুনাম করলে সে বরদাশত করতে পারে না। আর এ অহংকারই একজন মানুষকে জাহান্নামে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট।
তেমনিভাবে অধিকাংশ নারীই কুধারনার রোগী হয়ে থাকেন।আর সামান্য সন্দেহ থেকে কুধারনা আর সে কুধারনা থেকে মিথ্যা অপবাদের মত কবিরা গুনাহে লিপ্ত হওয়া, যা জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত একটি কারন।
আজকাল যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশী দেখা যায় তা হল কোন কারনে স্বামীর সাথে ঝগড়া হলে স্বামীকে এমনভাবে রাগান্বিত করে স্বামীকে এমন এমন কথা বলে যাতে স্বামীও প্রকাশ্য কিংবা কেনায়াতান এমন বাক্য বলে দেয় যাতে তালাক হয়ে যায়, আর তালাক হয়ে যাওয়ার পরও সে স্বামীর সাথে সংসার করতে থাকে। যা মারাত্মক হারাম কাজ। অনেক স্বামী স্ত্রী এমনও পাওয়া যায় তালাক দিয়ে দেয়ার পরও বছরের পর বছর একসাথে থাকে। নাউজুবিল্লাহ। এক হাদীসে আছে নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেছেন কেয়ামতের আগে স্বামী স্ত্রী একে অপরের সাথে জেনা করবে। এ হাদীসে এসব স্বামী স্ত্রীর ব্যপারেই ইশারা করা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েরই সতর্ক হওয়া খুবই জরুরী।
তাছাড়া অধিকাংশ নারীর নেক আমলই দেখা যায় শুধুমাত্র লোক দেখানো, কিংবা লোকে কি বলবে এ ভয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা, যার ফলে তার নেক আমলেও আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত থাকে না, গুনাহ থেকে বাঁচাটাও আল্লাহর ভয়ে হয় না ফলে সে সব আমলই ছাওয়াব শুন্য হয়।
নবী করিম (দঃ) এর ফরমান (মিন তিসইন ওয়াতিসইনা ইমরায়াতিন ওয়াহিদাতুন ফিল জান্নাহ) অথ্যাৎ ৯৯ নারীর মধ্যে থেকে ১ জন শুধু জান্নাতে যাবে (ওয়া বাকিয়্যাতুহুন্না ফিন্নার) আর বাকী সকলেই জাহান্নামে যাবে। এ হাদীস এবং এর আলোকে যে আলোচনা করা হল তা নারীদের জন্য খুবই জরুরী ও আই ওপেনার। আশা করি সকল নারী এ বিষয়ে গরুত্বের সাথে গ্রহণ করবেন, যেখানে যেখানে সংশোধন করা সম্ভব সেখানে সেখানে সংশোধন করে নিবেন। জাহান্নামের রাস্তা বন্ধ করে জান্নাতে যাওয়ার রাস্তা সহজ করবেন। (কানযুল উম্মল ৪৫০৭০)(মসনদে আবি এয়ালা ২৪৬০)
No comments:
Post a Comment