Tuesday, December 29, 2020

কিভাবে নিজের ব্যক্তিত্ব দৃঢ় করবো?

ব্যক্তিত্ব বৃদ্ধির সেরা


“সে একজন ব্যক্তিত্বহীন লোক” অথবা “লোকটার ব্যক্তিত্ব আছে। খুব সহজেই সবকিছু ম্যানেজ করে নিতে পারে”- এ ধরণের কথাবার্তা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। এই ব্যক্তিত্ব এমন একটি প্যারমিটার- যেটার মাধ্যমে একদল মানুষ থেকে একজন মানুষকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়।

ব্যক্তিত্ব কি? কিভাবে ব্যাক্তিত্ব বাড়ানো যায়?
ব্যক্তিত্ব হলো একজন মানুষের আচার-আচরণের সমষ্টি- যার মাধ্যমে ঐ ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং কাজ-কর্ম প্রতিফলিত হয়।

যেহেতু ব্যক্তিত্ব (সেটা ভাল বা খারাপ- যা ই হোক) বিষয়টি মানুষের আচার-আচরণের উপর নির্ভর করে, সেক্ষেত্রে আচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে অবশ্যই ব্যক্তিত্ব বাড়ানো সম্ভব। নিচে ব্যক্তিত্ব বৃদ্ধির করার সেরা ১০টি কৌশল তুলে ধরা হলো:

১. ভালো শ্রোতা হোন
শুনোন বেশি, বলুন কম। যখন অনেক কথা শুনোর পর মূল বিষয়ের উপর অল্প বাক্যে মূল বিষয়টি বলবেন, তখন আপনার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ পাবে। এজন্য সব সময় কথা শোনার উপর জোর দিন। যেকোন নতুন পরিবেশে ভাল মানের শ্রোতা হতে পারলে আপনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে। ব্যকিত্ব বাড়ানোর জন্য লিসেনিং স্কিল জানতে হবে।

২. কথা বলার কৌশল জানুন
কথা বলাটা অনেক ক্ষেত্র একটা আর্ট হিসেবে ধরা হয়। আমরা সবাই কথা বলতে জানি, কিন্তু ব্যক্তিত্ব ধরে রাখার জন্য কথা বলার কৌশল জানা খুব জরুরি। এই জন্য খুব হাঁসি মুখে মিষ্টি সুরে কথা বলার চেষ্টা করুন। কথা বার্তায় মার্ধুযতা থাকলে যে কোনো পরিবেশে মর্যাদা নিয়ে চলতে আপনাকে কষ্ট পোহাতে হবে না।

৩. সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলুন
সম্মান দিয়ে কথা বলুন
সম্মান অর্জন করতে হলে সম্মান করা শিখতে হয়। ব্যক্তিত্ব বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে প্রত্যেক মানুষকে সম্মান করতে হবে। যারা অন্যকে সম্মান করে কথা বলে, যে কারও ভাল কাজে প্রশংসা করে তাদেরকে লোকজন সম্মানের সহিত মনে রাখে । সম্মান বৃদ্ধির উপায় হলো যেকোন পরিবেশে সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলুন।

৪. সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলুন
হাসি আপনার ইগোকে নিয়ন্ত্রণ করে। আপনার কথা বলার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে । শ্রোতার মনোযোগ ধরে রাখার জন্য মিষ্টি হেসে কথা বলুন। মুখে সবসময় হাসি থাকলে লোকজন আপনাকে ইতিবাচক মানুষ হিসেবে বিবেচনা করবে। এভাবে আপনি যে কারো মন খুব সহজেই আকৃষ্ট করতে পারবেন। আপনার কথাগুলো মন্ত্রমুগদ্ধ হয়ে শুনতে থাকবে যদি সঠিক সময়ে মিষ্টি হেসে কথা বলতে পারেন।

৫. বুঝেশুনে কথা বলুন
অযথা কথা বলতে থাকলে আপনার ব্যক্তিত্ব হ্রাস পাবে। নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে কথা বলতে যাবেন না। ব্যক্তিত্ব পরিমাপের উপায় হিসেবে লোকজন আপনার অযথা কথা বার্তা থেকে ধারণা লাভ করে নিবে। তাই জানার পরিধির বাইরে গিয়ে কথা বলতে যাবেন না। বুঝেশুনে কথা বললে আপনার ব্যক্তিত্ব ফুঠে উঠবে।

৬. জানার পরিধি বৃদ্ধি করুন
জানার পরিধি বৃদ্ধি করুন
নতুন নতুন বিষয়ে জানার পরিধি বাড়াতে থাকুন। জানার পরিধি বাড়াতে থাকলে নিজের ভিতরে অনেক বিষয়ে সচেতনতা, দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। জ্ঞানী লোককে সবাই সমাদর করে। জানার পরিধি বেশি থাকলে অন্যলোকজন বিভিন্ন বিষয়ে আপনার কাছ থেকে জানার সুযোগ পাবে। জ্ঞান অর্জন সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) বলেছেন

“জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজনে চীন দেশে যাও“

৭. ইতিবাচক মানুষের সাথে চলুন
ব্যক্তিত্ব গঠনের উপায় হিসেবে সব সময়েই ইতিবাচক মানুষের সাথে চলুন। নেতিবাচক মানুষকে লোকজন পছন্দ করে না। গীবত, পরনিন্দা, অন্যের দোষত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করা এগুলো থেকে বিরত থাকুন। ইতিবাচক মানুষের সাথে চলাফেরা করলে নিজের ভিতরে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে। ব্যক্তিত্ব ধরে রাখার উপায় হিসেবে ইতিবাচক মানুষের সাথে চলাফেরা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

৮. যেকোন কাজে নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করুন
নেতৃত্ব দানকারী ব্যক্তিকে সবাই মনে রাখে। যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপনি নেতিৃত্বের ভূমিকায় থাকলে খুব সহজেই সবার মাঝে পরিচিত হয়ে যাবেন। সমাজের যেকোন কাজে সবসময় নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করুন।

সবার বিপদে এগিয়ে যাওয়া, পাড়া-মহল্লার সকলের সাথে যোগাযোগ করা, যেকোন অনুষ্ঠানে দায়িত্ববান হয়ে কাজ করা, ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা রাখা, সততার সাথে কাজ সম্পাদন করা, আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, বিশ্বাস অর্জন করা, সৃজনশীলতা বাড়ানো ইত্যাদি কাজের মাধ্যেমে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে। জনপ্রিয় হওয়ার উপায় হিসেবে নেতৃত্ব অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।

৯. প্রতিজ্ঞাগুলো সময়মত পূরণ করুন
অন্যের সাথে যেকোন বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে গেলে অবশ্যই সেটি সময়ত পূরণ করুন। ব্যক্তিত্ব বৃদ্ধির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো টাইম ম্যানেজমেন্ট। প্রতিজ্ঞাগুলো আদায় করতে আপনি যদি গড়িমসি করেন তাহলে লোকজন আপনাকে নেগেটিভ চোঁখে দেখবে। কথা ভঙ্গ কারী লোকজনকে কেউ পছন্দ করে না সেজন্য কখনই প্রতিজ্ঞাগুলোকে আলসেমি করে ভূলে যাবেন না।

১০. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন
স্মার্ট পোশাক আপনার মনকে সবসময় সতেজ রাখে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন লোককে সবাই পছন্দ করে। ব্যক্তিত্ব বৃদ্ধির কৌশল হল নিয়মিত গোলস করা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান, হাত ও পায়ের নখগুলো ছোট করে রাখা এবং চুলগুলোকে পরিষ্কার রাখুন।

No comments:

Post a Comment